রবিবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৫

ইমাম মাহদি

ইমাম মাহদি 

 


ইমাম মাহদির আগমনপূর্ব আলামতঃ ইরাক ও সিরিয়ার উপর অবরোধ
~~~~~
আবু নাদ’রা বর্ণনা করেন, আমরা হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি বললেন,

“সেই সময়টি অতি নিকটে, যখন ইরাকিদের ‘দিরহাম’ ও ‘কাফিজ’ এর উপর অবরোধ আরোপ করা হবে”।
জিজ্ঞেস করা হল, এই অবরোধ কার পক্ষ থেকে আরোপ করা হবে? উত্তরে তিনি বললেন, “অনারবদের পক্ষ থেকে”। এরপর বললেন, “সেই সময়টিও বেশি দূরে নয়, যখন সিরিয়ার অধিবাসীদের ‘মাদ’ ও ‘দিনার’ এর উপরও অবরোধ আরোপ করা হবে”। জিজ্ঞেস করা হল, এই অবরোধ কার পক্ষ থেকে হবে? বললেন, “পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে”। কিছু সময় নীরব থাকার পর বললেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমার শেষ উম্মতের মধ্যে এমন এক খলীফার (ইমাম মাহদির) আবির্ভাব ঘটবে, যে মানুষকে মুঠি ভরে ভরে সম্পদ দান করবে এবং কোন হিসাব গণনা করবে না”।

(সহিহ মুসলিম, অধ্যায় ৪১, হাদিস নং ৬৯৬১)

হাদিসের দিকে তাকালে দেখা যায়, এমনকি অবরোধ আরোপের সিরিয়াল পর্যন্ত দেওয়া আছে। ৬ ই আগস্ট ১৯৯০ থেকে শুরু হওয়া ইরাকি অবরোধ শুরু হয়। আর ২০১১ এর আগস্ট থেকে সিরিয়ার উপরও অবরোধ চলছে।

সিরিয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্টভাবে শুধু “পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে” বলা হলেও ইরাকের ক্ষেত্রে “অনারবদের পক্ষ থেকে” বলা হয়েছে এবং কুয়েত দখলের পরপরই ৬ ই আগস্ট ১৯৯০ তারিখে হাদিসের শাব্দিক প্রয়োগকে বাস্তবে রুপ দিয়ে প্রথম অনারব সংগঠন (পশ্চিম, পূর্বসহ সকল জাতীয়তার সংগঠন) “আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিষদ” কর্তৃক ইরাকের উপর অর্থনৈতিক ও সব ধরনের বানিজ্যের উপর বানিজ্যিক অবরোধ আরোপ করা হয়। হাদিসে বলা হয়েছে, “ইরাকিদের ‘দিরহাম’ ও ‘কাফিজ’ এর উপর অবরোধ আরোপ করা হবে”।

দিরহাম = অর্থ
কাফিজ = তেল মাপার আঞ্চলিক একক

১ দিনার = ৭২ টি বার্লি দানার সম ওজন সম্পন্ন স্বর্ণ মুদ্রা। বর্তমান ৪.৪৫গ্রাম সোনা।
১ দিরহাম = ০.৭ দিনার (৭০% স্বর্ণ দিনার)

২০০৩ সালে যুদ্ধ শুরু হবার পর থেকেই ইরাকি সেন্ট্রাল ব্যাংক ইরাকি দিনার নোট থেকে ‘০০০’ তুলে দিয়ে সমমানের নতুন একক প্রচলনের চেষ্টা করছে। যার প্রথম চালান ২০১৪ তে আসার কথা।

উল্লেখ্য যে, ইতিহাসে ‘কাফিজ’ শব্দটি সব সময়ই তৈল মাপার একক হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। ব্যবসা বানিজ্যের ক্ষেত্রে দক্ষিন ইতালির উপর আরব প্রভাব থাকার কারণে তৈল মাপার এককের ক্ষেত্রে সিসিলিয়ান ভাষায় আরবি ভাষার “কাফিজ” শব্দের অনুরূপ “কাফিসু” (Kafisu /kafiso) শব্দ এসেছে।

এক টানা ১৩ বছর পর্যন্ত এই অবরোধের পর ২০০৩ সালের ২২ শে মে অধিকাংশ অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। অবরোধের যেই শর্তগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের তৈল কোম্পানির অনুকূলে ছিল সেগুলো ২০১০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবত ছিল। আর অবরোধের যেই শর্তটি কুয়েত দখলের ক্ষতিপূরণ হিসাবে এখনও ইরাকের গ্যাস ও তৈল বিক্রির উপার্জন উপর থেকে ৫% কেটে নেয়, সেটি এখনও বলবত আছে।

কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নার্সিং অধ্যাপক রিচার্ড গারফিল্ড তার সেপ্টেম্বর ৪, ২০০৩ এ প্রকাশিত “The Iraqi babies scam is still alive” নিবন্ধে যুদ্ধ ব্যতীত শুধু এই অবরোধের ফলে অতিরিক্ত ৩,৪৫,০০০ থেকে ৫,৩০,০০০ নারী, শিশু ও বেসামরিক ইরাকির মৃত্যুর কথা উল্লেখ করেছেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন